কালেমার মর্মকথা : অবতরণিকা
অবতরণিকা
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আমরা তাঁরই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তাঁরই নিকট তওবা করি। আমাদেরকে সমস্ত বিপর্যয় ও কুকীর্তি থেকে রক্ষা করার জন্য তাঁরই সাহায্য প্রার্থনা করি। আল্লাহ যাকে হিদায়েত দান করেন তার কোন পথভ্রষ্টকারী নেই, আর যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার কোন পথ প্রদর্শনকারী নেই।
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আমরা তাঁরই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তাঁরই নিকট তওবা করি। আমাদেরকে সমস্ত বিপর্যয় ও কুকীর্তি থেকে রক্ষা করার জন্য তাঁরই সাহায্য প্রার্থনা করি। আল্লাহ যাকে হিদায়েত দান করেন তার কোন পথভ্রষ্টকারী নেই, আর যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার কোন পথ প্রদর্শনকারী নেই।
অতঃপর আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। আল্লাহর পক্ষ থেকে কিয়ামত পর্যন্ত সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর রাসূল, আহলে বাইত এবং সমস্ত সাহাবীদের উপর। ঐ সমস্ত ব্যক্তিদের উপরও, যারা অনুসরণ করেছেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এবং আঁকড়ে ধরেছেন তাঁর সুন্নাহকে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাঁর জিকির করার জন্য আদেশ করেছেন এবং তিনি তাঁর জিকিরকারীদের প্রশংসা করেছেন ও তাদের জন্য পুরস্কারের ওয়াদা করেছেন। তিনি আমাদেরকে সাধারণভাবে সর্বাবস্থায় তাঁর জিকির করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আবার বিভিন্ন ইবাদত সম্পন্ন করার পর তাঁর জিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে বলেন বলেন,
فَإِذَا قَضَيْتُمُ الصَّلاَةَ فَاذْكُرُواْ اللّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِكُمْ
‘‘অতঃপর তোমরা যখন নামাজ সমাপ্ত কর তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহর জিকির কর।’’ [ সূরা আন্ নিসা : ১০৩]
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে আরো বলেন,
فَإِذَا قَضَيْتُم مَّنَاسِكَكُمْ فَاذْكُرُواْ اللّهَ كَذِكْرِكُمْ آبَاءكُمْ أَوْ أَشَدَّ ذِكْرًا
‘‘আর যখন তোমরা হজের যাবতীয় অনুষ্ঠান সমাপ্ত করবে তখন আল্লাহর জিকির করবে, যেমন করে স্মরণ করতে তোমাদের পিতৃপুরুষদেরকে, বরং তার চেয়েও বেশি স্মরণ করবে।’’ [সূরা আল বাক্বারা : ২০০]
বিশেষ করে হজব্রত পালনের সময় তাঁর জিকির করার জন্য বলেন,
فَإِذَا أَفَضْتُم مِّنْ عَرَفَاتٍ فَاذْكُرُواْ اللّهَ عِندَ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ
‘‘অতঃপর যখন আরাফাত থেকে তোমরা ফিরে আসবে তখন (মুযদালাফায়) মাশআরে হারাম -এর নিকট আল্লাহর জিকির কর।’’ [ সূরা আল বাক্বারা : ২০০]
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে আরো বলেন,
وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَّعْلُومَاتٍ عَلَى مَا رَزَقَهُم مِّن بَهِيمَةِ الأنْعَامِ
‘‘এবং তারা যেন নির্দিষ্ট দিনগুলিতে আল্লাহ তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তুর মধ্য থেকে যে সমস্ত রিজিক দিয়েছেন তার উপর আল্লাহর নাম জিকির করে।’’ [ সূরা আল-হাজ্জ, ২৮]
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে আরো বলেন,
{وَاذْكُرُواْ اللّهَ فِي أَيَّامٍ مَّعْدُودَاتٍ }
‘‘আর এই নির্দিষ্ট সংখ্যক কয়েক দিনে আল্লাহর জিকির কর।’’ (সূরা আল বাক্বারাহ, ২০৩)
এছাড়া আল্লাহর জিকিরের লক্ষ্যে তিনি নামাজ প্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা করেছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে বলেন,
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي
‘‘আমার জিকিরের জন্য নামাজ প্রতিষ্ঠিত কর।’’ (সূরা ত্বাহা, ১৪)
রাসূল সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তাশরীকের দিনগুলো হচ্ছে পানাহার এবং আল্লাহর জিকিরের জন্য। (সহিহ মুসলিম)
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيرًا وَسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلاً
‘‘হে ঈমানদারগণ আল্লাহকে বেশি বেশি করে জিকির কর এবং সকাল সন্ধ্যা তাঁর তাসবীহ পাঠ কর।’’ (সূরা আহযাব, ৪১ - ৪২)
এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে, সবচেয়ে উত্তম জিকির হলো,
لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ
অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মাবুদ নেই, তিনি একক তাঁর কোন শরীক নেই।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সবচেয়ে উত্তম দোয়া আরাফাত দিবসের দোয়া এবং সবচেয়ে উত্তম কথা যা আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবিগণ বলেছেন, তা হলো
لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ ، لَهُ الـمُـلْكُ وَ لَهُ الحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মাবুদ নেই, তিনি একক তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব একমাত্র তাঁরই জন্য এবং প্রশংসা একমাত্র তাঁরই জন্য তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
আল্লাহর জিকিরসমূহের মধ্যে " لاَ إِلهَ إِلاَّ الله এই মহামূল্যবান বাণীর রয়েছে বিশেষ মর্যাদা এবং এর সাথে সম্পর্ক রয়েছে বিভিন্ন হুকুম আহকামের। আর এই কালেমার রয়েছে এক বিশেষ অর্থ ও উদ্দেশ্য এবং কয়েকটি শর্ত, ফলে এ কালেমাকে গতানুগতিক মুখে উচ্চারণ করাই ঈমানের জন্য যথেষ্ট নয়। এ জন্যই আমি আমার লেখার বিষয়বস্ত্ত হিসাবে এ বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েছি এবং আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি তিনি যেন আমাকে এবং আপনাদেরকে এই মহান কালেমার ভাবাবেগ ও মর্মার্থ অনুধাবন করত: এর দাবি অনুযায়ী তাঁর সমস্ত কাজ করার তাওফীক দান করেন এবং আমাদেরকে ঐ সমস্ত লোকদের অন্তর্ভুক্ত করেন যাঁরা এই কালেমাকে সঠিক অর্থে বুঝতে পেরেছেন। প্রিয় পাঠক! এ কালেমার ব্যাখ্যা দানকালে আমি নিম্নের বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করব :
মানুষের জীবনে এ কালেমার মর্যাদা
ফজিলত
ব্যাকরণিক ব্যাখ্যা
স্তম্ভ বা রোকনসমূহ
শর্তাবলি
অর্থ এবং দাবি
কখন মানুষ এ কালেমা পাঠে উপকৃত হবে আর কখন উপকৃত হবে না
আমাদের সার্বিক জীবনে এর প্রভাব কি ?
মানুষের জীবনে এ কালেমার মর্যাদা
ফজিলত
ব্যাকরণিক ব্যাখ্যা
স্তম্ভ বা রোকনসমূহ
শর্তাবলি
অর্থ এবং দাবি
কখন মানুষ এ কালেমা পাঠে উপকৃত হবে আর কখন উপকৃত হবে না
আমাদের সার্বিক জীবনে এর প্রভাব কি ?
মুহাম্মদ মতিউল ইসলাম বিন আলী আহমদ
No comments:
Post a Comment