তাওহিদের বিশ্বাসসমূহ : ০৯ : আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উদ্দেশ্যে কোনো কিছু জবেহ করা
গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে কোনো কিছু জবেহ করা
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে ইরশাদ করেছেন,
قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ﴿162﴾ لَا شَرِيكَ لَهُ (الأنعام: 162-163
‘‘আপনি বলুন, ‘‘আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ [সবই] আল্লাহ রাববুল আলামীনের উদ্দেশ্যে নিবেদিত, যার কোন শরিক নেই (আনআম : ১৬২)
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে আরো ইরশাদ করেছেন,
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ ﴿2﴾ (الكوثر: 2)
‘‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন। (আল-কাউসারঃ ২)
হজরত আলী (রা.) থেকে বর্নিত আছে, তিনি বলেছেন, রাসূল (সা.) চারটি বিষয়ে আমাকে অবহিত করেছেন,
(ক) لعن الله من ذبح لغير الله
‘‘যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে (পশু) জবেহ করে তার উপর আল্লাহর লানত।
(খ) لعن الله من لعن والديه
‘‘যে ব্যক্তি নিজ পিতা- মাতাকে অভিশাপ দেয় তার উপর আল্লাহর লানত।
(গ) لعن الله من آوى محدثا
‘‘যে ব্যক্তি কোন বিদআতীকে আশ্রয় দেয় তার উপর আল্লাহর লানত।
(ঘ) لعن الله من غير منار الأرض
‘‘যে ব্যক্তি জমির সীমানা [চিহ্ণ] পরিবর্তন করে তার উপর আল্লাহর লানত। (মুসলিম)
(ক) لعن الله من ذبح لغير الله
‘‘যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে (পশু) জবেহ করে তার উপর আল্লাহর লানত।
(খ) لعن الله من لعن والديه
‘‘যে ব্যক্তি নিজ পিতা- মাতাকে অভিশাপ দেয় তার উপর আল্লাহর লানত।
(গ) لعن الله من آوى محدثا
‘‘যে ব্যক্তি কোন বিদআতীকে আশ্রয় দেয় তার উপর আল্লাহর লানত।
(ঘ) لعن الله من غير منار الأرض
‘‘যে ব্যক্তি জমির সীমানা [চিহ্ণ] পরিবর্তন করে তার উপর আল্লাহর লানত। (মুসলিম)
তারিক বিন শিহাব কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
دخل الجنة رجل فى ذباب ودخل النار رجل فى ذباب قالوا وكيف ذلك يا رسول الله قال: مر رجلان على قوم لهم صنم لا يجوزه أحد حتى يقرب له شيئا فقالوا لاحدهما : قرب قال: ليس عندي شئ أقرب، قالوا له: قرب ولو ذباب فقرب ذباب فخلوا سبيله فدخل النار، وقالوا للآخر: قرب، قال ما كنت أقرب شيئا دون الله عز وجل فضربوا عنقه فدخل الجنة. (رواه احمد)
‘‘এক ব্যক্তি একটি মাছির ব্যাপারে জান্নাতে প্রবেশ করেছে। আর এক ব্যক্তি একটি মাছির ব্যাপারে জাহান্নামে গিয়েছে। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, এমনটি কিভাবে হলো? তিনি বললেন, ‘দুজন লোক এমন একটি কওমের নিকট দিয়ে যাচ্ছিল যার জন্য একটি মূর্তি নির্ধারিত ছিল। উক্ত মূর্তিকে কোন কিছু নাজরানা বা উপহার না দিয়ে কেউ সে স্থান অতিক্রম করতো না। উক্ত কওমের লোকেরা দুজনের একজনকে বললো, ‘মূর্তির জন্য তুমি কিছু নাজরানা পেশ করো। সে বললো, ‘নাজরানা দেয়ার মত আমার কাছে কিছুই নেই তারা বললো, ‘অন্তত একটা মাছি হলেও নাজরানা স্বরূপ দিয়ে যাও। অতঃপর সে একটা মাছি মূর্তিকে উপহার দিলো। তারাও লোকটির পথ ছেড়ে দিলো। এর ফলে মৃত্যুর পর সে জাহান্নামে গেলো। অপর ব্যক্তিকে তারা বললো, ‘‘মূর্তিকে তুমিও কিছু নাজরানা দিয়ে যাও। সে বললো, ‘একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নৈকট্য লাভের জন্য আমি কাউকে কোন নাজরানা দেইনা এর ফলে তারা তার গর্দান উড়িয়ে দিলো। [শিরক থেকে বিরত থাকার কারণে] মৃত্যুর পর সে জান্নাতে প্রবেশ করলো। (আহমদ)
এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয় গুলো জানা যায় :
১। قل إن صلاتي ونسكي এর তাফসির।
২। فصل لربك وانحر এর তাফসির।
৩। প্রথম অভিশপ্ত ব্যক্তি হচ্ছে গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু জবেহকারী।
৪। যে ব্যক্তি নিজ পিতা-মাতাকে অভিশাপ দেয় তার উপর আল্লাহর লানত। এরমধ্যে এ কথাও নিহিত আছে যে তুমি কোন ব্যক্তির পিতা-মাতাকে অভিশাপ দিলে সেও তোমার পিতা-মাতাকে অভিশাপ দিবে।
৫। যে ব্যক্তি বিদআতীকে আশ্রয় দেয় তার উপর আল্লাহর লানত। বিদআতী হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যে দ্বীনের মধ্যে এমন কোন নতুন বিষয় আবিস্কার বা উদ্ভাবন করে, যাতে আল্লাহর হক ওয়াজিব হয়ে যায়। এর ফলে সে এমন ব্যক্তির আশ্রয় চায় যে তাকে উক্ত বিষয়ের দোষ ত্রুটি বা অশুভ পরিণতি থেকে রক্ষা করতে পারে।
৬। যে ব্যক্তি জমির সীমানা বা চিহ্ণ পরিবর্তন করে তার উপর আল্লাহর লানত। এটা এমন চিহ্ণিত সীমানা যা তোমার এবং তোমার প্রতিবেশীর জমির অধিকারের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করে। এটা পরিবর্তনের অর্থ হচ্ছে, তার নির্ধারিত স্থান থেকে সীমানা এগিয়ে আনা অথবা পিছনে নিয়ে যাওয়া।
৭। নির্দিষ্ট ব্যক্তির উপর লানত এবং সাধারণভাবে পাপীদের উপর লানতের মধ্যে পার্থক্য।
৮। এ গুরুত্বপূর্ণ কাহিনীটি মাছির কাহিনী হিসেবে পরিচিত।
৯। তার জাহান্নামে প্রবশে করার কারণ হচ্ছে ঐ মাছি, যা নযরানা হিসেবে মূর্তিকে দেয়ার কোন ইচ্ছা না থাকা সত্বেও কওমের অনিষ্টতা হতে বাঁচার উদ্দেশ্যেই সে [মাছিটি নযরানা হিসেবে মূর্তিকে দিয়ে শিরকী] কাজটি করেছে।
১০। মোমিনের অন্তরে শিরকের [মারাত্মক ও ক্ষতিকর] অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞান লাভ। নিহত [জান্নাতী] ব্যক্তি নিহত হওয়ার ব্যাপারে কি ভাবে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু তাদের দাবীর কাছে সে মাথা নত করেনি। অথচ তারা তার কাছে কেলমাত্র বাহ্যিক আমল ছাড়া আর কিছুই দাবী করেনি।
১১। যে ব্যক্তি জাহান্নামে গিয়েছে সে একজন মুসলমান। কারণ সে যদি কাফের হতো তাহলে এ কথা বলা হতোনা دخل النار فى ذباب একটি মাছির ব্যাপারে সে জাহান্নামে প্রবেশ করেছে। [অর্থাৎ মাছি সংক্রান্ত শিরকী ঘটনার পূর্বে সে জান্নাতে যাওয়ার যোগ্য ছিল]
১২। এতে সেই সহীহ হাদিসের পক্ষে সাক্ষ্য পাওয়া যায়, যাতে বলা হয়েছে, الجنة اقرب إلى أجدكم من شراك نعله والنار مثل ذلك ‘‘জান্নাত তোমাদের কোন ব্যক্তির কাছে তার জুতার ফিতার চেয়েও নিকটবর্তী। জাহান্নামও তদ্রুপ নিকটবর্তী।
১৩। এটা জেনে নেয়া প্রয়োজন যে, অন্তরের আমলই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য। এমনকি মূর্তি পূজারীদের কাছেও এ কথা স্বীকৃত।
১। قل إن صلاتي ونسكي এর তাফসির।
২। فصل لربك وانحر এর তাফসির।
৩। প্রথম অভিশপ্ত ব্যক্তি হচ্ছে গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু জবেহকারী।
৪। যে ব্যক্তি নিজ পিতা-মাতাকে অভিশাপ দেয় তার উপর আল্লাহর লানত। এরমধ্যে এ কথাও নিহিত আছে যে তুমি কোন ব্যক্তির পিতা-মাতাকে অভিশাপ দিলে সেও তোমার পিতা-মাতাকে অভিশাপ দিবে।
৫। যে ব্যক্তি বিদআতীকে আশ্রয় দেয় তার উপর আল্লাহর লানত। বিদআতী হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যে দ্বীনের মধ্যে এমন কোন নতুন বিষয় আবিস্কার বা উদ্ভাবন করে, যাতে আল্লাহর হক ওয়াজিব হয়ে যায়। এর ফলে সে এমন ব্যক্তির আশ্রয় চায় যে তাকে উক্ত বিষয়ের দোষ ত্রুটি বা অশুভ পরিণতি থেকে রক্ষা করতে পারে।
৬। যে ব্যক্তি জমির সীমানা বা চিহ্ণ পরিবর্তন করে তার উপর আল্লাহর লানত। এটা এমন চিহ্ণিত সীমানা যা তোমার এবং তোমার প্রতিবেশীর জমির অধিকারের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করে। এটা পরিবর্তনের অর্থ হচ্ছে, তার নির্ধারিত স্থান থেকে সীমানা এগিয়ে আনা অথবা পিছনে নিয়ে যাওয়া।
৭। নির্দিষ্ট ব্যক্তির উপর লানত এবং সাধারণভাবে পাপীদের উপর লানতের মধ্যে পার্থক্য।
৮। এ গুরুত্বপূর্ণ কাহিনীটি মাছির কাহিনী হিসেবে পরিচিত।
৯। তার জাহান্নামে প্রবশে করার কারণ হচ্ছে ঐ মাছি, যা নযরানা হিসেবে মূর্তিকে দেয়ার কোন ইচ্ছা না থাকা সত্বেও কওমের অনিষ্টতা হতে বাঁচার উদ্দেশ্যেই সে [মাছিটি নযরানা হিসেবে মূর্তিকে দিয়ে শিরকী] কাজটি করেছে।
১০। মোমিনের অন্তরে শিরকের [মারাত্মক ও ক্ষতিকর] অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞান লাভ। নিহত [জান্নাতী] ব্যক্তি নিহত হওয়ার ব্যাপারে কি ভাবে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু তাদের দাবীর কাছে সে মাথা নত করেনি। অথচ তারা তার কাছে কেলমাত্র বাহ্যিক আমল ছাড়া আর কিছুই দাবী করেনি।
১১। যে ব্যক্তি জাহান্নামে গিয়েছে সে একজন মুসলমান। কারণ সে যদি কাফের হতো তাহলে এ কথা বলা হতোনা دخل النار فى ذباب একটি মাছির ব্যাপারে সে জাহান্নামে প্রবেশ করেছে। [অর্থাৎ মাছি সংক্রান্ত শিরকী ঘটনার পূর্বে সে জান্নাতে যাওয়ার যোগ্য ছিল]
১২। এতে সেই সহীহ হাদিসের পক্ষে সাক্ষ্য পাওয়া যায়, যাতে বলা হয়েছে, الجنة اقرب إلى أجدكم من شراك نعله والنار مثل ذلك ‘‘জান্নাত তোমাদের কোন ব্যক্তির কাছে তার জুতার ফিতার চেয়েও নিকটবর্তী। জাহান্নামও তদ্রুপ নিকটবর্তী।
১৩। এটা জেনে নেয়া প্রয়োজন যে, অন্তরের আমলই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য। এমনকি মূর্তি পূজারীদের কাছেও এ কথা স্বীকৃত।
রচয়িতা : মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব
No comments:
Post a Comment