তাওহিদের বিশ্বাসসমূহ : ১০ : গাছ, পাথর ইত্যাদি দ্বারা বরকত হাসিল করা
গাছ, পাথর ইত্যাদি দ্বারা বরকত হাসিল করা
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে ইরশাদ করেছেন, ‘‘ তোমরা কি [পাথরের তৈরী মুর্তি] ‘লাত আর ‘‘উয্যা দেখেছো ? (আন নাজমঃ ১৯)।
আবু ওয়াকিদ আল-লাইছী (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন,
‘‘আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে হুনাইনের [যুদ্ধের] উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। আমরা তখন সবেমাত্র ইসলাম গ্রহণ করেছি [নও মুসলিম]। একস্থানে পৌত্তুলিকদের একটি কুলগাছ ছিল যার চারপাশে তারা বসতো এবং তাদের সমরাস্ত্র ঝুলিয়ে রাখতো। গাছটিকে তারা ذات أنواط [যাত আনওয়াত] বলতো। আমরা একদিন একটি কুলগাছের পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল মুশরিকদের যেমন যাতু আনওয়াত আছে আমাদের জন্যও অনুরূপ ‘‘যাতু আনওয়াত [অর্থাৎ একটি গাছ] নির্ধারণ করে দিন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘‘আল্লাহু আকবার, তোমাদের এ দাবীটি পূর্ববর্তী লোকদের রীতি-নীতি ছাড়া আর কিছুই নয়। যার হাতে আমার জীবন তাঁর কসম করে বলছি, তোমরা এমন কথাই বলেছো যা বনি ইসরাইল মূসা (আ.)-কে বলেছিলো। তারা বলেছিলো, ‘‘হে মূসা, মুশরিকদের যেমন মাবুদ আছে আমাদের জন্য তেমন মাবুদ বানিয়ে দাও। মুসা (আ.) বললেন, তোমরা মূর্খের মতো কথা বার্তা বলছো (আরাফঃ ১৩৮)। তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের রীতি-নীতিই অবলম্বন করছো। (তিরমিজি হাদিসটি বর্ণনা করেছেন এবং সহিহ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয় গুলো জানা যায় :
১। সূরা নাজম এর أفرايتم اللات والعزى এর তাফসির।
২। সাহাবায়ে কেরামের কাংখিত বিষয়টির পরিচয়।
৩। তারা [সাহাবায়ে কেরাম] শিরক করেননি।
৪। তাঁরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে চেয়েছিলেন এ কথা ভেবে যে, আল্লাহ তা পছন্দ করেন।
৫। সাহাবায়ে কেরামই যদি এ ব্যাপারে অজ্ঞ থাকেন তাহলে অন্য লোকেরা তো এ ব্যাপারে আরো বেশী অজ্ঞ থাকবে।
৬। সাহাবায়ে কেরামের জন্য যে অধিক সওয়াব দান ও গুনাহ মাফের ওয়াদা রয়েছে অন্যদের ব্যাপারে তা নেই।
৭। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামের কাছে অপারগতার কথা বলেননি বরং তাঁদের কথার শক্ত জবাব এ কথার মাধ্যমে দিয়েছেন,
১। সূরা নাজম এর أفرايتم اللات والعزى এর তাফসির।
২। সাহাবায়ে কেরামের কাংখিত বিষয়টির পরিচয়।
৩। তারা [সাহাবায়ে কেরাম] শিরক করেননি।
৪। তাঁরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে চেয়েছিলেন এ কথা ভেবে যে, আল্লাহ তা পছন্দ করেন।
৫। সাহাবায়ে কেরামই যদি এ ব্যাপারে অজ্ঞ থাকেন তাহলে অন্য লোকেরা তো এ ব্যাপারে আরো বেশী অজ্ঞ থাকবে।
৬। সাহাবায়ে কেরামের জন্য যে অধিক সওয়াব দান ও গুনাহ মাফের ওয়াদা রয়েছে অন্যদের ব্যাপারে তা নেই।
৭। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামের কাছে অপারগতার কথা বলেননি বরং তাঁদের কথার শক্ত জবাব এ কথার মাধ্যমে দিয়েছেন,
ألله أكبر إنها السنن لتتبعن سنن من كان قبلكم
‘‘আল্লাহু আকবার নিশ্চয়ই এটা পূর্ববর্তী লোকদের নীতি। তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের নীতি অনুসরণ করছো। উপরোক্ত তিনটি কথার দ্বারা বিষয়টি অধিক গুরুত্ব লাভ করেছে।
৮। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে উদ্দেশ্য। এখানে এ কথাও জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, সাহাবায়ে কেরামের দাবী মূলতঃ মূসা (আ.) -এর কাছে বনি ইসরাইলের মাবুদ বানিয়ে দেয়ার দাবীরই অনুরূপ ছিল।
৯। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক না সূচক জবাবের মধ্যেই তাঁদের জন্য ‘‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর মর্মার্থ অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে নিহিত আছে।
১০। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফতোয়া দানের ব্যাপারে হলফ করেছেন।
১১। শিরকের মধ্যে আকবার ও আসগার রয়েছে। কারণ, তাঁরা এর দ্বারা দীন থেকে বের হয়ে যাননি।
১২। আমরা কুফরি যমানার খুব কাছাকাছি ছিলাম [অর্থাৎ আমরা সবেমাত্র মুসলমান হয়েছি] এ কথার দ্বারা বুঝা যায় যে অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম এ ব্যাপারে অজ্ঞ ছিলেন না।
১৩। আশ্চর্যজনক ব্যাপারে যারা আল্লাহু আকবার বলা পছন্দ করে না, এটা তাদের বিরুদ্ধে একটা দলীল।
১৪। পাপের পথ বন্ধ করা।
১৫। জাহেলি যুগের লোকদের সাথে নিজেদের সামঞ্জস্যশীল করা নিষেধ।
১৬। শিক্ষাদানের সময় প্রয়োজন বোধে রাগ করা।
১৭। إنها السنن এটা পূর্ববর্তী লোকদের নীতি এ বাণী একটা চিরন্তন নীতি।
১৮। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সংবাদ বলেছেন, বাস্তবে তাই ঘটেছে। এটা নবুয়তেরই নিদর্শন।
১৯। কোরানে কারিমে আল্লাহ তাআলা ইহুদী ও খৃষ্টানদের চরিত্র সম্পর্কে যে দোষ-ত্রুটির কথা বলেছেন, তা থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করার জন্যই বলেছেন।
২০। তাদের [আহলে কিতাবের] কাছে এ কথা স্বীকৃত যে ইবাদতের ভিত্তি হচ্ছে [আল্লাহ কিংবা রাসুলের] নির্দেশ। এখানে কবর সংক্রান্ত বিষয়ে শর্তকতা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে।
৮। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে উদ্দেশ্য। এখানে এ কথাও জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, সাহাবায়ে কেরামের দাবী মূলতঃ মূসা (আ.) -এর কাছে বনি ইসরাইলের মাবুদ বানিয়ে দেয়ার দাবীরই অনুরূপ ছিল।
৯। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক না সূচক জবাবের মধ্যেই তাঁদের জন্য ‘‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর মর্মার্থ অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে নিহিত আছে।
১০। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফতোয়া দানের ব্যাপারে হলফ করেছেন।
১১। শিরকের মধ্যে আকবার ও আসগার রয়েছে। কারণ, তাঁরা এর দ্বারা দীন থেকে বের হয়ে যাননি।
১২। আমরা কুফরি যমানার খুব কাছাকাছি ছিলাম [অর্থাৎ আমরা সবেমাত্র মুসলমান হয়েছি] এ কথার দ্বারা বুঝা যায় যে অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম এ ব্যাপারে অজ্ঞ ছিলেন না।
১৩। আশ্চর্যজনক ব্যাপারে যারা আল্লাহু আকবার বলা পছন্দ করে না, এটা তাদের বিরুদ্ধে একটা দলীল।
১৪। পাপের পথ বন্ধ করা।
১৫। জাহেলি যুগের লোকদের সাথে নিজেদের সামঞ্জস্যশীল করা নিষেধ।
১৬। শিক্ষাদানের সময় প্রয়োজন বোধে রাগ করা।
১৭। إنها السنن এটা পূর্ববর্তী লোকদের নীতি এ বাণী একটা চিরন্তন নীতি।
১৮। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সংবাদ বলেছেন, বাস্তবে তাই ঘটেছে। এটা নবুয়তেরই নিদর্শন।
১৯। কোরানে কারিমে আল্লাহ তাআলা ইহুদী ও খৃষ্টানদের চরিত্র সম্পর্কে যে দোষ-ত্রুটির কথা বলেছেন, তা থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করার জন্যই বলেছেন।
২০। তাদের [আহলে কিতাবের] কাছে এ কথা স্বীকৃত যে ইবাদতের ভিত্তি হচ্ছে [আল্লাহ কিংবা রাসুলের] নির্দেশ। এখানে কবর সংক্রান্ত বিষয়ে শর্তকতা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে।
من ربك [তোমার রব কে?] দ্বারা যা বুঝানো হয়েছে তা সুস্পষ্ট। [অর্থাৎ আল্লাহ শিরক করার নির্দেশ না দেয়া সত্বেও তুমি শিরক করেছো। তাহলে তোমার রব কে যার হুকুমে শিরক করেছো?]।
من نبيك [ তোমার নবি কে] এটা নবি কর্তৃক গায়েবের খবর [অর্থাৎ কবরে কি প্রশ্ন করা হবে এ কথা নবি ছাড়া কেউ বলতে পারেনা। এখানে এ কথার দ্বারা বুঝানো হচ্ছে কে তোমার নবি? তিনি তো শিরক করার কথা বলেননি। তারপর ও তুমি শিরক করেছো। তাহলে তোমার শিরক করার নির্দেশ দাতা নবি কে?]
ما دينك [তোমার দীন কি] এ কথা তাদের إجعل لنا آلهة [আমাদের জন্যও ইলাহ ঠিক করে দিন এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হবে। [অর্থাৎ তোমার দ্বীনতো শিরক করার নির্দেশ দেয়নি তাহলে তোমাকে শিরকের নির্দেশ দান কারী দ্বীন কি?]
২১। মুশরিকদের রীতি-নীতির মত আহলে কিতাবের [অর্থাৎ আসমানী কিতাব প্রাপ্তদের] রীতি-নীতিও দোষনীয়।
২২। যে বাতিল এক সময় অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছিলো তা পরিবর্তনকারী একজন নওমুসলিমের অন্তর পূর্বের সে অভ্যাস ও স্বভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নয়। ونحن حدثاء عهد بكفر [আমরা কুফরি যুগের খুব নিকটবর্তী ছিলাম বা নতুন মুসলমান ছিলাম] সাহাবিদের এ কথার দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়।
২২। যে বাতিল এক সময় অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছিলো তা পরিবর্তনকারী একজন নওমুসলিমের অন্তর পূর্বের সে অভ্যাস ও স্বভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নয়। ونحن حدثاء عهد بكفر [আমরা কুফরি যুগের খুব নিকটবর্তী ছিলাম বা নতুন মুসলমান ছিলাম] সাহাবিদের এ কথার দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়।
রচয়িতা : মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব
No comments:
Post a Comment