কালেমার মর্মকথা : কালেমার স্তম্ভ বা রুকন

         কালেমার মর্মকথা : কালেমার স্তম্ভ বা রুকন


কালেমার স্তম্ভ বা রুকন
" لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ " এই কালেমার দুটি স্তম্ভ বা রুকন। এই কালেমার দুটি স্তম্ভ বা রুকন আছে, একটি হলো না বাচক আর অপরটি হলো হাঁ বাচক।

না বাচক কথাটির অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ ব্যতীত সমস্ত কিছুর ইবাদতকে অস্বীকার করা। আর হাঁ বাচক কথাটির অর্থ হচ্ছে একমাত্র আল্লাহই সত্য মাবুদ। আর মুশরিকগন আল্লাহ ব্যতীত যে সব মাবুদের উপাসনা করে তার সবগুলো মিথ্যা এবং বানোয়াট মাবুদ।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে বলেন,
ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِن دُونِهِ هُوَ الْبَاطِلُ
‘‘এটা এ জন্য যে, আল্লাহ-ই প্রকৃত সত্য, আর তিনি ব্যতীত যাদেরকে তারা ডাকে সে সব কিছুই বাতিল।’’(আল হাজ্ব-৬২ )
ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা ইলাহ বা মাবুদ এ কথার চেয়ে ‘আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন সত্য মাবুদ নেই’ এই বাক্যটি আল্লাহর উলুহিয়াত প্রতিষ্ঠার জন্য অধিকতর মজবুত দলীল। কেননা; ‘আল্লাহ ইলাহ’ একথা দ্বারা অন্যসব যত ভ্রান্ত ইলাহ রয়েছে তাদের উলুহিয়াতকে অস্বীকার করা হয় না। আর ‘আললাহ ব্যতীত অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই’ এ কথাটি উলুহিয়্যাতকে একমাত্র আল্লাহর জন্য সীমাবদ্ধ করে দেয় এবং অন্য সকল বাতিল ইলাহকে অস্বীকার করে। কিছু লোক চরম ভুল বশত বলে থাকে যে, ‘ইলাহ’ অর্থ সৃষ্টির ক্ষেত্রে তিনি ক্ষমতাবান।
আশ-শেখ সুলায়মান বিন আব্দুল্লাহ তাঁর কিতাবুত তাওহীদে এর ব্যাখ্যায় বলেন, কেউ যদি মনে করে ‘ইলাহ এবং উলুহিয়্যাতের’ অর্থ হলো, নব সৃষ্টিতে পূর্ণ মাত্রায় ক্ষমতাশালী অথবা এ ধরনের অন্য কোন অর্থ, তখন উত্তরে এ ব্যক্তিকে কি বলা হবে?
মূলত: এই প্রশ্নের উত্তরের দুটি পর্যায় রয়েছে।
প্রথমত: এটা একটা উদ্ভট, অজ্ঞতা প্রসূত কথা। এ ধরনের কথা বিদআ’তী ব্যক্তিরাই বলে থাকে। কোন বিজ্ঞ আলেম বা আরবী ভাষাবিদ ‘ইলাহ’ শব্দের এ ধরনের অর্থ করেছেন বলে কেউ বলতে পারবে না। বরং তাঁরা এ শব্দের ঐ অর্থই করেছেন যা আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি। অতএব, এ ধরনের ব্যাখ্যা ভুল বলে প্রমাণিত হলো।
দ্বিতীয় : ক্ষণিকের জন্য এ অর্থকে মেনে নিলেও এমনিতেই ‘সত্য ইলাহ’ যিনি হবেন তাঁর জন্য সৃষ্টি করার গুণাবলি একান্তই অপরিহার্য। অতএব ‘ইলাহ’ হওয়ার জন্য সৃষ্টি করার সার্বিক যোগ্যতা থাকা তো অঙ্গাঙ্গিভাবেই তার সাথে জড়িত। আর যে কোন কিছু সৃষ্টি করতে অক্ষম সে তো ‘ইলাহ’ থেকে পারে না, যদিও তাকে ইলাহ রূপে কেউ অভিহিত করে থাকে। এ জন্য ‘আল্লাহ নব সৃষ্টিতে ক্ষমতাশালী’ এটুকু বিশ্বাস কোন ব্যক্তির ইসলামের গন্ডিতে প্রবেশের জন্য যথেষ্ট নয় এবং এতটুকু কথা কিয়ামতের দিন জান্নাত লাভের জন্যও যথেষ্ট নয়। আর যদি এতটুকু বিশ্বাসই যথেষ্ট হতো তাহলে আরবের কাফিররাও মুসলমান বলে বিবেচিত হতো। তাই এ যুগের কোন লেখক যদি ‘ইলাহ’ শব্দের এ অর্থ করে থাকেন তা হলে তাকে ভ্রান্ত বলতে হবে এবং কোরান হাদিসের জ্ঞানগর্ভ দলিল দ্বারা এর প্রতিবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।
মুহাম্মদ মতিউল ইসলাম বিন আলী আহমদ

No comments:

Post a Comment