ড. আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপস। বর্তমান সময়ে পিস টিভির নিয়মিত বক্ত। তিনি একাধারে শিক্ষক, বক্তা ও লেখক। ১৯৪৬ সালের ৬ জানুয়ারি জ্যামাইকায় এক খ্রিস্টান পরিবারে তারজন্ম। বড় হন কানাডায়। জন্মসূত্রে নাম ছিল ডেনিস ব্র্যাডলি ফিলিপস। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি আরব আমিরাতে বাস করছিলেন। সেখানে থেকে তিনি অধ্যাপনা, প্রকাশনা, খুতবা ও বক্তৃতার মাধ্যমে ইসলামের শিক্ষাকে প্রচার করে আসছিলেন।
তবে তার স্পষ্টবাদিতার কারণে তাকে আরব আমিরাত ত্যাগ করতে হয়। বর্তমানে তিনি কাতারে বসবাসরত।
ফিলিপস ষাটের দশকের শেষ দিকে ভ্যানকুভারে সাইমন ফ্রেসার ইউনির্ভাসিটিতে পড়া অবস্থায় সেখানকার বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনে যোগদান করেন। ধীরে ধীরে কম্যুনিজমের প্রতি আগ্রহ জন্মায় এবং কম্যুনিস্ট আদর্শ গ্রহণ করেন। তিনি এক বছর স্যান ফ্রান্সিস্কোতে কম্যুন্সিট পার্টির সাথে কাজ করার পর এই দলের কর্মকান্ডের আসল রূপ দেখতে পেয়ে ফের কানাডায় ফিরে আসেন।
কম্যুনিস্ট দর্শন তাকে সন্তুষ্ট করতে পারছিল না, এ দর্শন সমাজকে পরিবর্তনের কথা বললেও পরিবর্তন আনার মতো বাস্তবধর্মী হাতিয়ার এর ছিল না, তাছাড়া কম্যুনিস্ট দর্শন প্রস্তাবিত অর্থনৈতিকব্যবস্থা ছিল ব্যর্থ, আর শ্রমজীবী শ্রেণীর স্বার্থের নামে পরিচালিত গণনির্যাতনকে তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। তাছাড়া বহু বামপন্থী নেতা ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন অত্যন্ত অসৎ ও অনৈতিক। অবশেষে তিনি কম্যুনিজম ত্যাগ করেন এবং হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম প্রভৃতি অন্যান্য ধর্ম ও দর্শন পরখ করে দেখেন।
কম্যুনিস্ট দর্শন তাকে সন্তুষ্ট করতে পারছিল না, এ দর্শন সমাজকে পরিবর্তনের কথা বললেও পরিবর্তন আনার মতো বাস্তবধর্মী হাতিয়ার এর ছিল না, তাছাড়া কম্যুনিস্ট দর্শন প্রস্তাবিত অর্থনৈতিকব্যবস্থা ছিল ব্যর্থ, আর শ্রমজীবী শ্রেণীর স্বার্থের নামে পরিচালিত গণনির্যাতনকে তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। তাছাড়া বহু বামপন্থী নেতা ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন অত্যন্ত অসৎ ও অনৈতিক। অবশেষে তিনি কম্যুনিজম ত্যাগ করেন এবং হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম প্রভৃতি অন্যান্য ধর্ম ও দর্শন পরখ করে দেখেন।
১৯৭১ সালে তার এক কম্যুনিস্ট বন্ধু ইসলাম গ্রহণ করলে তিনি ধর্মটির প্রতি আকৃষ্ট হন এবং এ নিয়ে পড়াশুনা শুরু করেন। তিনি উপলব্ধি করেন, ইসলামেই রয়েছে মানবজাতির জন্য শ্রেষ্ঠ সমাধান, এতে রয়েছে সমাজবাদী এবং পুঁজিবাদী দর্শনের ভালো দিকগুলোর সমন্বয়। ছয় মাসের পড়াশুনা এবং আলোচনা-পর্যালোচনার পর তিনি ১৯৭২ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এর এক বছর পর তিনি মদিনার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন।
১৯৭৯ সালে তিনি মদিনার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উসুল আল দ্বীন অনুষদ থেকে আরবি ভাষায় ডিপ্লোমা এবং বি এ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক থিওলজিতে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিষয়ের ওপর তিনি ১৯৯৪ সালে ডক্টরেট ডিগ্রি নেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস-এর ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ থেকে।
উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় এবং এর ঠিক পরপর তিনি তার কয়েকজন সঙ্গীসহ সৌদি আরবে অবস্থিত মার্কিন বাহিনীর কাছে ইসলামের শিক্ষা উপস্থাপন করার এক প্রোজেক্ট হাতে নেন, মার্কিন সেনাদের মাঝে বিদ্যমান ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করা ছিল তাদের এই প্রজেক্টের লক্ষ্য। তাদের এই প্রচেষ্টায় তিন হাজারের ওপর মার্কিন সেনা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি আরব আমিরাতে বসবাসরত ছিলেন। সেখানে থেকে তিনি অধ্যাপনা, প্রকাশনা, খুতবা এবং বক্তৃতার মাধ্যমে ইসলামের বিশুদ্ধ শিক্ষাকে প্রচারের কাজ করে আসছিলেন।
তিনি সারজাহতে দার আল ফাতাহ প্রেস, দুবাইতে ডিসকভার ইসলাম নামক ইসলাম প্রচার কেন্দ্র, সারজাহ টিভি চ্যানেল-২, স্যাটেলাইট (ইসলামি চ্যানেল), আজমান টিভি চ্যানেল-৪ এবং সৌদি টিভি চ্যানেল-২-এর সাথে ইসলাম প্রচারের কাজে জড়িত ছিলেন। তিনি বর্তমান বিশ্বের নামকরা ইসলামি পণ্ডিত এবং চিন্তাবিদদের অন্যতম। তিনি ইসলামিক চ্যানেল পিস টিভিরও বক্তা।
ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটি হল ডক্টর আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপসের চিন্তা ও প্রচেষ্টার ফসল এবং এক মহতী উদ্যোগ। তিনি ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটি (www.islamiconlineuniversity.com) নামে কাতারে একটি বিশ্ববিদ্যালয় মানের অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। অনলাইনে ইসলামভিত্তিক বিষয় পড়াশুনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি অর্জনের সুব্যবস্থা রয়েছে এই ওয়েবসাইট বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।
এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিলাল ফিলিপস তার ওয়েবসাইটে বলেন, দূরশিক্ষণ বর্তমানে একটি কার্যকরী ব্যবস্থা হয়ে উঠছে, যার মাধ্যমে সাধারণ মুসলিমরা তাদের বিশ্বাস সম্পর্কে শিক্ষালাভ করতে পারবে। বর্তমানে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপসহ বেশির ভাগ দেশেই এর দাপ্তরিক শাখা বিদ্যমান এবং শাখাভুক্ত দেশসহ তার বাইরেও বহুসংখ্যক শিক্ষার্থী রয়েছে।
তার ৩০টিরও বেশি প্রকাশনা রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বক্তৃতার ভিডিও। আমাদের দেশীয় বিভিন্ন প্রকাশনী ড. আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপসের লেখা বই বাংলায় অনুবাদ করে প্রকাশ করে থাকে।
তার লেখা কয়েকটি বই :
* Fundamentals of TAWHEED (Islamic Monotheism), International Islamic Publishing House; (ISBN 9960-9648-0-9)
* The Evolution of Fiqh (Islamic Law & The Madh-habs), International Islamic Publishing House (Edited by Bradley Philips); (ISBN 9960-672-86-7)
* True Message of Jesus Christ, Islamic Book Services 2006; (ISBN 81-7231-360-8)
* Purpose of Creation 84pp, Islamic Book Services 2002; (ISBN 81-7231-358-6)
* Funeral Rites, International Islamic Publishing House; (ASIN 9960850846)
* Polygamy in Islam, Islamic Book Services; (ISBN 81-7231-715-8)
* Islamic Studies, Al-Basheer 2002; (ISBN 1-898649-19-7) আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপসের কিছু উক্তি :
একজন মুসলিম স্বামীর প্রথম কর্তব্য হলো তার স্ত্রীকে আধ্যাত্মিক পথের নির্দেশনা দেয়া।
আমরা যা শিখছি তা যদি আমাদের বিশ্বাসের উপর কোনো প্রভাব ফেলতে না পারে, আমাদেরকে আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যেতে না পারে, আমাদের বিশ্বাসকে আরো মজবুত করতে না পারে- তাহলে এর অর্থ হচ্ছে আমাদের উদ্দেশ্যে, নিয়তে ভুল আছে।
আপনি যেদিন উপলব্ধি করবেন ইসলামের জন্য কী বিশাল পরিমাণ কাজ করা প্রয়োজন অথচ হাতে কতটা কম সময় রয়েছে, সেদিন বুঝতে পারবেন ছুটির দিন কাটানোর মতো কোনো সময় নেই।
বিলাল ফিলিপসের ওয়েবসাইট : http://www.bilalphilips.com/
বিলাল ফিলিপসের ফেসবুক পেজ : https://www.facebook.com/DrBilalPhilips
তথ্যসূত্র : বিভিন্ন ওয়েবসাইট
No comments:
Post a Comment