রহমান রহীম আল্লাহ্ তায়ালার নামে -
এ-কথা জানা প্রয়োজন যে, আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতির উপর সর্ব প্রথম যা ফরজ করেছেন তা হচ্ছে তাগুতের সাথে কুফরি এবং আল্লাহর উপর ঈমান।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
“আর নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি এ কথা বলে যে, তোমরা শুধু আল্লাহর উপাসনা কর এবং তাগুতকে পরিত্যাগ কর।” [সূরা আন্-নাহল: ৩৬]
তাগুতের সাথে কুফরির ধরণ হলো : আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছুর উপাসনা (ইবাদত) বাতিল বলে বিশ্বাস করা, তা ত্যাগ করা, ঘৃণা ও অপছন্দ করা, এবং যারা তা করবে তাদের অস্বীকার করা, তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা।
আর আল্লাহর উপর ঈমানের অর্থ হলো : আল্লাহ তা‘আলাই কেবলমাত্র হক উপাস্য ইলাহ, অন্য কেউ নয়— এ-কথা বিশ্বাস করা, আর সবরকম ইবাদতকে নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট করা যাতে এর কোন অংশ অন্য কোন উপাস্যের জন্য নির্দিষ্ট না হয়; আর মুখলিস বা নিষ্ঠাবানদের ভালবাসা, তাদের মাঝে আনুগত্যের সম্পর্ক স্থাপন করা, মুশরিকদের ঘৃণা ও অপছন্দ করা, তাদের শত্রুতা করা।
আর এটাই ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম এর প্রতিষ্ঠিত দীন বা মিল্লাত, যে ব্যক্তি তার থেকে বিমুখ হবে সে নিজ আত্মাকে বোকা বানাবে, আর এটাই হলো সে আদর্শ (أسوة) বা (Model) যার কথা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বাণীতে বলেছেন : “অবশ্যই তোমাদের জন্য রয়েছে ইবরাহীম ও তার সাথীদের মাঝে সুন্দর আদর্শ, যখন তারা তাদের জাতিকে বলেছিল: আমরা তোমাদের এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের অপরাপর উপাস্য দেবতাদের থেকে সম্পূর্ণ সম্পর্কমুক্ত, আমরা তোমাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলাম, আর আমাদের ও তোমাদের মাঝে চিরদিনের জন্য শত্রুতা ও ঘৃণার সম্পর্ক প্রকাশ হয়ে পড়ল, যে পর্যন্ত তোমরা শুধু এক আল্লাহর উপর ঈমান স্থাপন না করছ।” [সূরা আল-মুমতাহিনাঃ ৪]
তাগুত:
শব্দটি ব্যাপক, এর দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত যা কিছুর ইবাদত বা উপাসনা করা হয়, এবং উপাস্য সে উপাসনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এমন সবকিছুকে অন্তর্ভুক্ত করে, চাই কি তা দেবতা, বা নেতা, বা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণের বাইরে অন্য কারো অনুসরণই হোক, ঐসবগুলোকেই তাগুত বলা হবে।
আর এ তাগুত -এর সংখ্যা অত্যধিক; তবে প্রধান-প্রধান তাগুত হলো পাঁচটি :
এক: শয়তান :
যে আল্লাহর ইবাদত থেকে মানুষকে অন্য কিছুর ইবাদতের দিকে আহবান করে।
এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী : “হে আদম-সন্তান, আমি কি তোমাদের থেকে শয়তানের ইবাদত না করার অঙ্গিকার নিই নি? নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” [সূরা ইয়াসিন: ৬০]
দুই: আল্লাহর আইন (হুকুম) পরিবর্তনকারী অত্যাচারী শাসক :
এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণী: “আপনি কি তাদের দেখেন নি যারা মনে করে আপনার কাছে এবং আপনার পূর্ববর্তীদের কাছে যা অবতীর্ণ হয়েছে তার উপর ঈমান এনেছে, তারা তাগুতকে বিচারক হিসাবে পেতে আকাঙ্ক্ষা করে অথচ তাদেরকে এর (তাগুতের) সাথে কুফরির নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। আর শয়তান তাদেরকে সহজ সরল পথ থেকে অনেক দুর নিয়ে যেতে চায়।” [সূরা আন্নিসাঃ ৬০]
তিন : আল্লাহ কর্তৃক অবতীর্ণ (আইনের) হুকুমের বিপরীত হুকুম প্রদানকারী :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “আর যারা আল্লাহর অবতীর্ণ আইন অনুসারে বিচার করে না তারা কাফের।” [সূরা আল মায়েদা: ৪৪]
চার : আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন গায়েবের খবর রাখার দাবিদার :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “তিনি গায়েবের জ্ঞানে জ্ঞানী, সুতরাং তার অদৃশ্য জ্ঞানকে কারও জন্য প্রকাশ করেন না, তবে যে রাসূল এর ব্যাপারে তিনি সন্তুষ্ট তিনি তাকে তার সম্মুখ ও পশ্চাৎ থেকে হিফাজত করেন।” [সূরা আল-জিন: ২৬, ২৭]
অন্য আয়াতে বলেন : “আর তার কাছেই সমস্ত অদৃষ্ট বস্তুর চাবিকাঠি, এগুলো তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না, তিনি জানেন যা ডাঙ্গায় আছে আর যা সমুদ্রে আছে। যে কোন (গাছের) পাতাই পতিত হয় তিনি তা জানেন, জমিনের অন্ধকারের কোন শস্য বা কোন শুষ্ক বা আর্দ্র বস্তু সবই এক প্রকাশ্য গ্রন্থে সন্নিবেশিত আছে।” [সূরা আল-আন‘আম: ৫৯]
পাঁচ : আল্লাহ ছাড়া যার ইবাদত করা হয় এবং সে এই ইবাদতে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “আর তাদের থেকে যে বলবে- আল্লাহ ব্যতীত আমি উপাস্য, তাকে আমি জাহান্নাম দ্বারা পরিণাম ফল প্রদান করব, এভাবেই আমি অত্যাচারীদের পরিণাম ফল প্রদান করে থাকি”। [সূরা আল-আন্বিয়াঃ ২৯]
মনে রাখা দরকার কোন মানুষ তাগুতের উপর কুফরি ছাড়া ইমানদার হতে পারেনা, আল্লাহ বলেন :
“সুতরাং যে তাগুতের সাথে কুফরি করে এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনে সে এমন মজবুত রজ্জুকে ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে যার কোন বিভক্তি বা চিড় নেই, আর আল্লাহ সর্ব শ্রোতা ও সর্ব জ্ঞানী।” [সূরা আল-বাকারা: ২৫৬]
এ আয়াতের পূর্বাংশে আল্লাহ বলেছেন যে, “বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন পথ, ভ্রষ্ট-পথ থেকে স্পষ্ট হয়েছে”। ‘বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন পথ’ বলতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দীনকে, আর ‘ভ্রান্ত-পথ’ বলতে আবু জাহলের দীন, আর এর পরবর্তী আয়াতের ‘মজবুত রশি বা রজ্জু’ দ্বারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (বা আল্লাহ ছাড়া হক কোন উপাস্য নেই) এ সাক্ষ্য প্রদানকে বুঝিয়েছেন।
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এ কলেমা কিছু জিনিসকে নিষেধ করে, এবং কিছু বস্তুকে সাব্যস্ত করে, সকল প্রকার ইবাদতকে আল্লাহর ছাড়া অন্যের জন্য হওয়া নিষেধ করে। শুধুমাত্র লা-শরীক আল্লাহর জন্য সকল প্রকার ইবাদতকে নির্দিষ্ট করে।
“আল্লাহর জন্যই সমস্ত শোকর, যার নেয়ামত ও অনুগ্রহেই যাবতীয় ভাল কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে।”
আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
“আর নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি এ কথা বলে যে, তোমরা শুধু আল্লাহর উপাসনা কর এবং তাগুতকে পরিত্যাগ কর।” [সূরা আন্-নাহল: ৩৬]
তাগুতের সাথে কুফরির ধরণ হলো : আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছুর উপাসনা (ইবাদত) বাতিল বলে বিশ্বাস করা, তা ত্যাগ করা, ঘৃণা ও অপছন্দ করা, এবং যারা তা করবে তাদের অস্বীকার করা, তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা।
আর আল্লাহর উপর ঈমানের অর্থ হলো : আল্লাহ তা‘আলাই কেবলমাত্র হক উপাস্য ইলাহ, অন্য কেউ নয়— এ-কথা বিশ্বাস করা, আর সবরকম ইবাদতকে নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট করা যাতে এর কোন অংশ অন্য কোন উপাস্যের জন্য নির্দিষ্ট না হয়; আর মুখলিস বা নিষ্ঠাবানদের ভালবাসা, তাদের মাঝে আনুগত্যের সম্পর্ক স্থাপন করা, মুশরিকদের ঘৃণা ও অপছন্দ করা, তাদের শত্রুতা করা।
আর এটাই ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম এর প্রতিষ্ঠিত দীন বা মিল্লাত, যে ব্যক্তি তার থেকে বিমুখ হবে সে নিজ আত্মাকে বোকা বানাবে, আর এটাই হলো সে আদর্শ (أسوة) বা (Model) যার কথা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বাণীতে বলেছেন : “অবশ্যই তোমাদের জন্য রয়েছে ইবরাহীম ও তার সাথীদের মাঝে সুন্দর আদর্শ, যখন তারা তাদের জাতিকে বলেছিল: আমরা তোমাদের এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের অপরাপর উপাস্য দেবতাদের থেকে সম্পূর্ণ সম্পর্কমুক্ত, আমরা তোমাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলাম, আর আমাদের ও তোমাদের মাঝে চিরদিনের জন্য শত্রুতা ও ঘৃণার সম্পর্ক প্রকাশ হয়ে পড়ল, যে পর্যন্ত তোমরা শুধু এক আল্লাহর উপর ঈমান স্থাপন না করছ।” [সূরা আল-মুমতাহিনাঃ ৪]
তাগুত:
শব্দটি ব্যাপক, এর দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত যা কিছুর ইবাদত বা উপাসনা করা হয়, এবং উপাস্য সে উপাসনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এমন সবকিছুকে অন্তর্ভুক্ত করে, চাই কি তা দেবতা, বা নেতা, বা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণের বাইরে অন্য কারো অনুসরণই হোক, ঐসবগুলোকেই তাগুত বলা হবে।
আর এ তাগুত -এর সংখ্যা অত্যধিক; তবে প্রধান-প্রধান তাগুত হলো পাঁচটি :
এক: শয়তান :
যে আল্লাহর ইবাদত থেকে মানুষকে অন্য কিছুর ইবাদতের দিকে আহবান করে।
এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী : “হে আদম-সন্তান, আমি কি তোমাদের থেকে শয়তানের ইবাদত না করার অঙ্গিকার নিই নি? নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” [সূরা ইয়াসিন: ৬০]
দুই: আল্লাহর আইন (হুকুম) পরিবর্তনকারী অত্যাচারী শাসক :
এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণী: “আপনি কি তাদের দেখেন নি যারা মনে করে আপনার কাছে এবং আপনার পূর্ববর্তীদের কাছে যা অবতীর্ণ হয়েছে তার উপর ঈমান এনেছে, তারা তাগুতকে বিচারক হিসাবে পেতে আকাঙ্ক্ষা করে অথচ তাদেরকে এর (তাগুতের) সাথে কুফরির নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। আর শয়তান তাদেরকে সহজ সরল পথ থেকে অনেক দুর নিয়ে যেতে চায়।” [সূরা আন্নিসাঃ ৬০]
তিন : আল্লাহ কর্তৃক অবতীর্ণ (আইনের) হুকুমের বিপরীত হুকুম প্রদানকারী :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “আর যারা আল্লাহর অবতীর্ণ আইন অনুসারে বিচার করে না তারা কাফের।” [সূরা আল মায়েদা: ৪৪]
চার : আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন গায়েবের খবর রাখার দাবিদার :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “তিনি গায়েবের জ্ঞানে জ্ঞানী, সুতরাং তার অদৃশ্য জ্ঞানকে কারও জন্য প্রকাশ করেন না, তবে যে রাসূল এর ব্যাপারে তিনি সন্তুষ্ট তিনি তাকে তার সম্মুখ ও পশ্চাৎ থেকে হিফাজত করেন।” [সূরা আল-জিন: ২৬, ২৭]
অন্য আয়াতে বলেন : “আর তার কাছেই সমস্ত অদৃষ্ট বস্তুর চাবিকাঠি, এগুলো তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না, তিনি জানেন যা ডাঙ্গায় আছে আর যা সমুদ্রে আছে। যে কোন (গাছের) পাতাই পতিত হয় তিনি তা জানেন, জমিনের অন্ধকারের কোন শস্য বা কোন শুষ্ক বা আর্দ্র বস্তু সবই এক প্রকাশ্য গ্রন্থে সন্নিবেশিত আছে।” [সূরা আল-আন‘আম: ৫৯]
পাঁচ : আল্লাহ ছাড়া যার ইবাদত করা হয় এবং সে এই ইবাদতে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “আর তাদের থেকে যে বলবে- আল্লাহ ব্যতীত আমি উপাস্য, তাকে আমি জাহান্নাম দ্বারা পরিণাম ফল প্রদান করব, এভাবেই আমি অত্যাচারীদের পরিণাম ফল প্রদান করে থাকি”। [সূরা আল-আন্বিয়াঃ ২৯]
মনে রাখা দরকার কোন মানুষ তাগুতের উপর কুফরি ছাড়া ইমানদার হতে পারেনা, আল্লাহ বলেন :
“সুতরাং যে তাগুতের সাথে কুফরি করে এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনে সে এমন মজবুত রজ্জুকে ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে যার কোন বিভক্তি বা চিড় নেই, আর আল্লাহ সর্ব শ্রোতা ও সর্ব জ্ঞানী।” [সূরা আল-বাকারা: ২৫৬]
এ আয়াতের পূর্বাংশে আল্লাহ বলেছেন যে, “বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন পথ, ভ্রষ্ট-পথ থেকে স্পষ্ট হয়েছে”। ‘বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন পথ’ বলতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দীনকে, আর ‘ভ্রান্ত-পথ’ বলতে আবু জাহলের দীন, আর এর পরবর্তী আয়াতের ‘মজবুত রশি বা রজ্জু’ দ্বারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (বা আল্লাহ ছাড়া হক কোন উপাস্য নেই) এ সাক্ষ্য প্রদানকে বুঝিয়েছেন।
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এ কলেমা কিছু জিনিসকে নিষেধ করে, এবং কিছু বস্তুকে সাব্যস্ত করে, সকল প্রকার ইবাদতকে আল্লাহর ছাড়া অন্যের জন্য হওয়া নিষেধ করে। শুধুমাত্র লা-শরীক আল্লাহর জন্য সকল প্রকার ইবাদতকে নির্দিষ্ট করে।
“আল্লাহর জন্যই সমস্ত শোকর, যার নেয়ামত ও অনুগ্রহেই যাবতীয় ভাল কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে।”
গ্রন্থনা: শাইখ আব্দুল্লাহ ইব্ন ইবরাহীম আল কার‘আওয়ী
অনুবাদ: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
সম্পাদনা: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
No comments:
Post a Comment